আপনি কাউকে একটা কথা বললেন কিন্তু আশানুরূপ মনোযোগ পেলেন না । সে আপনার কথার কোনো গুরুত্বই দিলনা। গ্রুপে আপনি কোনো ভালো আইডিয়া দিতে চাচ্ছেন কিন্তু কেউ আপনার কথা শুনছেই না। আপনাকে তারা সিরিয়াসলি নিচ্ছে না! এরকম অভিজ্ঞতা থাকলে আপনি নিশ্চয়ই নিজেকে অন্যের নিকট গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করাতে আগ্রহী। কিন্তু কেন কেউ আপনার কথায় কোনো গুরুত্ব দেয় না তা জানলে আপনি নিজেকে সুধরে নিতে পারেন। এতে আপনি সবার নিকট যথার্থ মনোযোগ পাবেন। তাই আসুন জেনে নেই কি কি কাজ করলে মানুষ আপনাকে সিরিয়াসলি নেওয়া বন্ধ করে:-
১)আপনি কথা দিয়ে কথা রাখেন না
ধরুন আপনি আপনার কোনো বন্ধুকে বললেন আমি কাল অবশ্যই কলেজে আসব। কিন্তু দেখা গেল আপনি আসলেন না। কেউ আপনাকে কোনো কাজ করতে বলল। আপনি কাজ করতে চাইলেন কিন্তু শেষমেশ করলেন না। কাউকে বললেন আমি ১০দিনের মাঝে এটা কমপ্লিট করব। কিন্তু কথা রাখতে পারলেন না। বন্ধুদের জানালেন মেয়েটাকে আজকেই প্রোপোজ করবেন! কিন্তু করলেন না! এসকল কম গুরুতর কথা দিয়ে কথা না রাখলেই অন্যেরা আপনাকে সিরিয়াসলি নেওয়া বন্ধ করবে। তাই কথা রাখতে পারবেন কিনা তা সন্দেহে থাকলে অবশ্যই কথা দেবেন না এবং কথা দিলে অবশ্যই পুর্ণ করবেন।
২)আপনি সবসময় কৌতুক করে থাকেন!
অনেক মানুষ আছে যারা প্রায় সবকিছুতে হাসার খোঁড়াক পায়। অন্যকে হাসাতে ভালোবাসে এবং নিজেও হাসে। এটা মোটেও খারাপ কিছু না কিন্তু এক্ষেত্রে এই কৌতুকপ্রবণতা আপনার কথা অন্যের কাছে কম গুরুতবহ করে তোলে। আবার অনেকে কৌতুক করার সময় যাতে পরিবেশটা বেশি হাস্যকর হয় তাই সিরিয়াস মুডে থাকার অভিনয় করে ।এভাবে কৌতুক করলে আপনাকে মানুষ সিরিয়াসলি নেবে না। তাই কৌতুক করবেন খুব কম এবং যখন কৌতুক করবেন তখন এমনভাবে কৌতুক করবেন যাতে সকলে বুঝতে পারে আপনি কৌতুক করছেন। এতে তারা সহজে আপনার সিরিয়াস মুড ও কৌতুক মুডকে পৃথক করতে পারবে।
৩)অপ্রয়োজনীয় কথা বলেন!
বেশিরভাগ মানুষই গুরুত্বপুর্ণ কথার সময় অপ্রয়োজনীয় কথা শুনতে পছন্দ করে না। কিন্তু আপনি যদি এমন হন যে বেশিরভাগ সময়ই অপ্রয়োজনীয় কথা বলেন তবে যখন আপনি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলবেন তখন মানুষ ভাববে আপনি এখনো অপ্রয়োজনীয় কথা বলছেন! তাই অপ্রয়োজনীয় কথা বলা বন্ধ করুন। আপনি যত কম কথা বলবেন আপনার কথার মূল্য ততই বেশি হবে!
৪)আপনি অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন না!
আপনি যদি অন্যের মতামতের গুরুত্ব না দেন তাহলে অন্যরাও আপনার মতামতের গুরুত্ব দেবেনা - এটাই সাভাবিক। তাই ভালো শ্রোতা হওয়ার চেষ্টা করুন। কথা বলার চেয়ে কথা শুনুন বেশি। অন্যের কথা শোনার সময় তার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকবেন এবং অন্য কোনো কাজ করবেন না। তা না হলে বক্তা আপনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
৫)আপনি সকলকে ইম্প্রেস করার চেষ্টা করেন!
সকলকে খুশি করতে চাওয়া একটি বড় ভুল। প্রথমত আপনি কখনোই সকলকে খুশি করতে পারবেন না। আবার অন্যের প্রশংসা বেশি বেশি করলে তারা আপনার কথাকে মূল্য দেবে না। তাই প্রশংসা শুধু সেখানেই করবেন যেখানে করলে লাভ হতে পারে। অযথা প্রশংসা করে অন্যের নিকট ভালো হওয়ার প্রয়োজন নেই।
৬)আপনি আপনার পোশাক পরিচ্ছদে গুরুত্ব দেন না!
মানুষ সর্বপ্রথম আপনার মানসিকতা, বুদ্ধি বিবেক ইত্যাদি নয় বরং দেখে পোশাক । সুতরাং প্রথম দেখাতেই যাতে আপনাকে অপ্রয়োজনীয় কেউ মনে না হয় সেরকম পোশাক পড়ুন। ভালো ও সুন্দর পোশাক পড়লে অন্যেরা আপনাকে গুরুত্ব দেবে।
৭)আপনি এখনো এমন এক গ্রুপে আছেন যেখানে কেউ আপনাকে গুরুত্ব দেয় না !
যদি এরকম হয় তবে সেই গ্রুপের নতুন মেম্বাররাও আপনার কথার গুরুত্ব দেবে না। আর একবার গুরুত্ব হারিয়ে গেলে ফিরে পাওয়া অসম্ভব। তাই সেটা যদি হয় কোনো বন্ধুদের গ্রুপ তাহলে সেই গ্রুপ ত্যাগ করুন। অনেক মানুষ আছে যাদের কাছে আপনি গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম থেকেই উপরোক্ত নিয়ম গুলো মেনে চলুন তাহলে সকলে আপনাকে সিরিয়াসলি নেবে।
৮)আপনার উচ্চতা বা বয়স কম কিংবা আপনার ব্যবহার ছোট শিশুর মতো!
এটি সত্য যে আপনার উচ্চতা কম হলে বন্ধু মহল সহ অনেক ক্ষেত্রে আপনাকে যথার্থ গুরুত্ব দেওয়া হবে না। আবার কম বয়সীদের গুরুত্ব না দেয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যদি আপনি বয়ষ্ক হয়েও ছোট বাচ্চার মত ব্যবহার করেন তাহলেও লোকে আপনার গুরুত্ব দেবে না।
৯)আপনি একজন মেয়ে।
আমাদের দেশ সহ অনেক দেশে মেয়েদের তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না,যা মোটেও সঠিক নয়। যদি আপনি এমন এক গ্রুপে থাকেন যেখানে প্রায় সকলেই ছেলে তাহলে আপনার কথার সঠিক গুরুত্ব নাও দেয়া হতে পারে। অর্থাৎ আপনাকে সিরিয়াসলি নেওয়া হবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে নিজ বুদ্ধিমত্তা দিয়ে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ করতে হবে।
১০)আপনি নিজেকে নিয়ে হতাশ ও নিজেকে সম্মান করেন না।
হতাশ মানুষকে কেউ পছন্দ করে না এবং সাধারনভাবেই তার মতামতের গুরুত্ব কম দেওয়া হয়। আবার যারা নিজেকে অন্যের নিকট তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে তাদের কথারও কেউ গুরুত্ব দেয় না। তাই কনফিডেন্স নিয়ে আসুন এবং নিজেকে সম্মান করতে শিখুন, নিজেকে ভালোবাসুন।